দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি?

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি? এ বিষয়ে আমি আজকে আপনাদের মাঝে সমাধানের বিভিন্ন পথ নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি উক্ত সমাধান গুলো আপনাদের দাম্পত্য জীবনে প্রয়োগ করলে ভালো ফলাফল লক্ষ্য করবেন। এক সাথে পথ চলতে গেলে অনেক সময় দুজনের মধ্যে মান-অভিমান সৃষ্টি হতে পারে। যখন এই মান-আভিমান পরস্পরের প্রতি বৃদ্ধি পায় তখনই ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। তাহলে চলুন জেনে নেই দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি?

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার কারণ কি?

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া হওয়া খুবই স্বাভাবিক। ভিন্ন দুইজন ব্যাক্তি একসাথে জীবনযাপন করার সময় মতভেদ হওয়া, অপেক্ষা করা এবং বিভিন্ন সমস্যার মোকাবেলা করা একদম স্বাভাবিক। তবে এই ঝগড়া গুলো কেন হয়, তার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে যেমনঃ

  • যোগাযোগের অভাবঃ অনেক সময় ঠিক মতো কথা না বলার কারণে ভুল বোঝাবুঝি হয়।
  • অভ্যাসের অমিলঃ দাম্পত্য একে উপরে অভ্যাস পছন্দ বা চিন্তভাবনা পার্থক্য থাকলে সমস্যা হতে পাড়ে।
  • আর্থিক সমস্যাঃ অর্থনৈতিক চাপ বা খরচের ব্যবস্থাপনার কারণে দুজনের মধ্যে ঝামেলা তৈরি হতে পড়ে।
  • পরিবারের চাপঃ দুই পরিবারের মধ্যকার সমস্যা দাম্পত্য জীবনে প্রভাব ফেলে।
  • সময়সীমাঃ একে অপরের জন্য পর্যাপ্ত সময় না দেওয়ার কারণে দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পাড়ে।
  • আবেগগত সমস্যাঃ মানসিক চাপ, হতাশা বা উদ্বেগ সম্পর্ক উপর প্রভাব ফেলতে পড়ে।

দাম্পত্য ঝগড়ার কিছু কারণ

দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া হওয়া খুবই স্বাভাবিক। দুইজন মানুষের মধ্যে মতবিরোধ হওয়া, বিভিন্ন বিষয়ে মতের অমিল হওয়া একেবারেই অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে এই ঝগড়া যাতে দাম্পত্য সম্পর্ককে ক্ষতি না করে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।

  • বোঝাবুঝিঃ প্রত্যেকেই যায় তার সঙ্গির তার মন ভালো কের বুঝতে কিন্তু এটা সব সময় সম্ভব হয় না এত দুজনের মাঝে মোনমালিন্য বাড়তে পারে।
  • অভ্যাসঃ দাম্পত্য জিবনে দুজনের অভ্যাস ও চরিত্রের মধ্যে পার্থক্য থাকলে ঝরগা হতে পাড়ে।
  • পারিবারিক সমস্যাঃ পরিবার এবং বন্ধু বা সামাজিক চাপের কারণে দুজনের ঝরগা হতে পারে।

দাম্পত্য ঝগড়া কীভাবে সামলাবেন

ঝগড়া করার সময় নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। রাগ পরিস্তিতি আরও খারাপ করে তুলতে পাড়ে। আপনাদের দুজনের সমস্যার মূল কারণ টা খুজুন আপনাদের মূল কারণ কী তা দুজন নিলে বের করার চেষ্টা করুন সমস্যা টা ঠিক ভাবে ধরতে পারলে সমাধান করা সহজ হবে। ঝগড়ার সময় শুধু আপনার নিজের কথা বলবেন না আপনার সঙ্গির কথাও শুনুন আপনি তার মনের ভাব বুঝতে চেষ্টা করুন। দুজনে মিলে সমাধান এর চেষ্টা করুন কোন একটি সমাধানে আপোস করতে হলেও করতে হবে। দাম্পত্য জিবনে অতীতে কেন ভুল গুলোকে ধরে রাখবেন বর্তমান নিয়ে থাকবেন এবং ঝগড়া হলেও এক সঙ্গে সময় কাটানের চেষ্টা করুন এতে সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। যদি নিজেদের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না তাহলে কোন এক বিশেজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ দাম্পত্য জীবনে ভালোবাসা টিকিয়ে রাখার ৭ টি সহজ উপায়

দাম্পত্য ঝগড়া এড়ানোর উপায়

  • আপনার সঙ্গির সাথে সব সময় খেলা মেলা যেগাযোগ রাখুন আপনার মনের কথা সব শেয়ার করুন।
  • আপনার সঙ্গিকে সম্মান করুন এবং তার মতামত কে গুরুত্ব দিন।
  • আপনার সঙ্গির ভালো কাজের জন্য প্রশংস করুন এবং আপনার সঙ্গির জন্য সময় বের করুন।
  • আপনারা এক উপরের কথা মনোযোগ সহকারে শুনুন এবং দুজন এক সঙ্গে নতুন কিছু করার পরিকল্পনা করুন এতে দুজনের মধ্যে কোন সমস্যা হবে না।
  • দাম্পত্য ঝগরা একটি স্বাভাবিক ঘটনা এই ঝগড়া যেন আবার সম্পর্কের জন্য বিপদ না আসে এইদিকে খেয়া রাখতে হবে।
  • কখানো কখনো কোন বিষয়ের জন্য সময় নেওয়া প্রয়োজন বেশি তারাহুরা না করে সব কিছু শান্ত হলে দুজন একসাথে বসে কথা বলুন এত আপনাদের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।
  • নিয়মিত আপনার জীবন সঙ্গি কে ভালোবাসুন এবং বেশি বেশি করে প্রসংসা করুন। এত দুজনের মধ্যে কোন ঝামেলা হবে না এবং সম্পর্ক আরো শক্ত হবে।

দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকার উপায়

দাম্পত্য জীবন একটি সুন্দর যাত্রা। কিন্তু এই যাত্রা কে সুখী করা জন্য দুজনের কিছু বিষয় খেয়াল করা জরুরি।

  • সম্মান ও ভালোবাসাঃ সব সময় একে উপরকে সম্মান করুন এবং ভালোবাসুন ছোট ছোট বিষয়ের জন্য ঝগড়া না করে সমস্যাটি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
  • সময় দেওয়াঃ আপনারা এক উপরের জন্য সময় বের করার চেষ্টা করুন। একসাথে কোথায় ঘুরতে যান বা সিনেমা দেখুল।
  • বিশ্বাসঃ এক উপরের উপর বিশ্বাস রাখুন এবং মনে কোন সন্দেহ রাখবেন না।
  • ক্ষমাঃ ভুল হলে ক্ষমা করে দেওয়া এবং দুজনকে ক্ষমা চাওয়া শিখুন।
  • সমস্যার সমাধানঃ কোন সমস্যা হলে তা এড়িয়ে না গিয়ে মিলে মিশে সমাধান করার চেষ্টা করুন।
  • সমর্থনঃ আপনার সঙ্গির স্বপ্ন ও লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করুন এবং তাকে উৎসাহিত করুন।
  • আত্মমর্যাদাঃ নিজের প্রতি আত্মমর্যাদা রাখুন এবং সঙ্গির থেকেও আশা করুন।
দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি

ছবিঃ রুমানা আক্তার রুমা

দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকার টিপ্সঃ

  • ধন্যবাদ জানানঃ আপনার সঙ্গির কাজের জন্য সব সময় ধন্যবাদ জানান?
  • সারপ্রাইজ দিনঃ মাঝে মধ্যে আপনার সঙ্গির জন্য সারপ্রাইজ দিন এতে সে অনেক খুশি হবে এবং ভালোবাসা বাড়বে।
  • স্বাধীনতাঃ আপনারা এক অপরকে স্বাধীনতা দিন।
  • সহানুভুতিঃ সঙ্গীর অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।

দাম্পত্য জীবনে যা যা করবেন না?

দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুস্থ রাখতে কিছু বিষয় এড়িয়ে চলা জরুরি।

যা যা করবেনঃ

  • অন্যের সাথে তুলনা করাঃ আপনার সঙ্গির সাথে তুলনা করা আপনার সম্পর্কে খারাপ হবে। আপনার সম্পর্কে অন্য কারোর সাথে তুলনা করলে দুজন দুজনের প্রতি অবিশ্বাস সৃষ্টি হবে।
  • অতীতকে আঁকড়ে থাকাঃ পুরোনো কথা বারবার না তুলে ধরা এতে সম্পর্ককে বিষাক্ত করে তোলে। বর্তমানে মনোযোগ দিয়ে আপনার ভবিষৎ এর জন্য কাজ করা উচিত।
  • অপমান জনক কথা বলাঃ রাগের মাথায় অপমান জনক কথা বলা সম্পর্কে গভীর ভাবে আাঘাত করে। কথা বার বার মনে পড়ে নিজের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি করা।
  • এক উপরকে অবহেলা করাঃ দৈনিন্দ জীবনে সঙ্গির প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন না হলে অবহেলা আপনার সম্পর্কে ফাটল ধরাতে পড়ে।
  • সন্দেহঃ অবিশ্বাস সম্পর্কের সবথেকে বড় শত্রু। আপনার মনে সন্দেহ বীজ বপন করলে সম্পর্কের মধ্যে দুরত্ব সৃষ্টি হয়।
  • স্বর্থপরতাঃ কেবল নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা করা সম্পর্ককে নষ্ট করে দেয়। একে অপরের প্রতি ভালোবাসা প্রয়োজন।

FAQs-

দাম্পত্য জীবনে সুখী থাকার টিপ্সঃ

  • ধন্যবাদ জানানঃ আপনার সঙ্গির কাজের জন্য সব সময় ধন্যবাদ জানান?
  • সারপ্রাইজ দিনঃ মাঝে মধ্যে আপনার সঙ্গির জন্য সারপ্রাইজ দিন এতে সে অনেক খুশি হবে এবং ভালোবাসা বাড়বে।
  • স্বাধীনতাঃ আপনারা এক অপরকে স্বাধীনতা দিন।
  • সহানুভুতিঃ সঙ্গীর অনুভূতির প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।

শেষ কথাঃ

আশা করি দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি? এর সম্পর্কে ধারণা দেওয়া চেষ্টা করেছি। আপনি এটি আপনারা প্রয়েগ করলে দাম্পত্য জীবনে সুখী হবেন। নিয়মিত আমাদের এই সতেজ মন সাইটে এ ধরনের লেখা পড়তে আমাদের সাথেই থাকুন। আর মতামত জানাতে ভুলবেন না। দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর সমাধান কি? যদি আপনারদের কাছে ভালো লাগে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না ধন্যবাদ- সতেজ মন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *